কেএম রফিক যশোর : যশোরের অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের মেম্বর উত্তম সরকার হত্যা মামলার চরমপন্থী দলের নেতা কিরণসহ ২০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে যশোর ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকতা ডিবি পুলিশের এসআই শামীম হোসেন।
অভিযুক্তরা হলো, পটুয়াখালী সদরের পুরান বাজার এলাকার মৃত. নারায়ণ চন্দ্র সাহার ছেলে চরমপন্থী দলের নেতা বাসুদেব সাহা ওরফে কিরণ ওরফে মাহমুদুর রহমান, যশোরের অভয়নগরের ফুলের গাতি গ্রামের মৃত মনোহর মল্লিকের ছেলে অর্ধেন্দু মল্লিক, তার স্ত্রী ইতিকা মল্লিক, ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের অখিল বিশ্বাসের ছেলে অমিতাভ বিশ্বাস, বারান্দীর পশ্চিম এলাকার মহন্ত দাসের ছেলে অনুপম দাস, কচুয়া গ্রামের প্রফুল্ল বিশ্বাস প্রদীপের ছেলে সাধন বিশ্বাস, সুন্দলী পূর্বপাড়ার মৃত ভদ্দরী বিশ্বাসের ছেলে প্রসেনজিৎ কুমার বিশ্বাস ওরফে বুলেট, আন্দা গ্রামের গনেশ মল্লিকের ছেলে দীপঙ্কর, ফুলেরগাতি গ্রামের নগেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে অসীম রায়, রামসারা গ্রামের নিখিল মন্ডলের ছেলে দীপঙ্কর মন্ডল, মণিরামপুরের পাঁচকাটিয়া গ্রামের নির্মল পাড়ের ছেলে পলাশ পাড়ে ওরফে ছোট দীপঙ্কর, পাঁচাকড়ি গ্রামের সহদেব বিশ্বাসের ছেলে অজয় বিশ্বাস, সুজাতপুর গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদীপ্ত, গাবখালী গ্রামের সাধন বিশ্বাসের ছেলে সুমন বিশ্বাস, খুলনা ডুমুরিয়ার দিঘলিয়া গ্রামের মৃত বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে বিজন চন্দ্র মন্ডল ওরফে বিনোদ, রুদাঘরা গ্রামের উত্তরপাড়ার সুভাষ মন্ডলের ছেলে শুভঙ্কর মন্ডল, একই গ্রামের ইসাহক গোলদারের ছেলে ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল, চহেড়া গ্রামের রামপদ ফকিরের ছেলে মহিতোষ সরকার, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দক্ষিণ কদমতলার মৃত শিবপদ মন্ডলের ছেলে প্রশান্ত মন্ডল, বাগেরহাট শহরের আলিয়া মাদরাসা রোডের জনৈক সৈয়দ নাজমুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া নুরু আব্দুল শেখের ছেলে হাসান শেখ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি অভয়নগরের হরিশংকরপুর গ্রামে নিজ বাড়ির কাছে চরমপন্থিদের গুলিতে নিহত হন সুন্দলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বর উত্তম সরকার। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি পুলিশ। এরপর তদন্তকালে বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে হত্যা মিশনে অংশ নেয়া কয়েকজনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, ইউপি নির্বাচনে জয়লাভে কাজ করতে চরমপন্থী নেতা কিরণের সাথে দেড় লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন উত্তম সরকার। প্রথমে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল কিরণকে। নির্বাচনে জয়লাভের পর বাকী ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করেন উত্তম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন চরমপন্থী নেতা কিরণ। এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অর্ধেন্দু মল্লিক গোপনে চরমপন্থী নেতা কিরণের সাথে যোগাযোগ করেন উত্তম সরকারকে সরিয়ে দেয়ার জন্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১০ জানুয়ারি রাতে উত্তম সরকারকে হত্যা করে চরমপন্থীরা। এ মামলার তদন্তকালে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের দেয়া বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই ২০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে অভিযুক্ত ১৩ জনকে আটক ও ৭ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।