চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর বিদায়ী চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারীকেই ফের মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার জনপদ সংবাদ কে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমরা ইউসুফ গাজীর পরিবর্তে নতুন করে ওসমান গণি পাটওয়ারীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছি।”
ওসমান গণি পাটওয়ারী ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়নেই চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বদলে এবার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইউসূফ গাজীকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।
গত ২৩ অগাস্ট এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্টিত হওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান রোববার বিকালে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ইউসূফ গাজীর মনোনয়ন বাতিল করেন।
প্রার্থী চাইলে তবে ওই প্রার্থী চাইলে এ আদেশের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ইউসুফ গাজীও সাংবাদিকদের আপিল করার কথা বলেছিলেন। তবে আওয়ামী লীগ তার আগেই দলীয় সমর্থন বদলে দিল।
বিদায়ী চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে মামলা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আনার পর নির্বাচন কমিশন শুনানি শেষে প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত জানায়।
অভিযোগে বলা হয়, প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তি।
ওই মামলায় আদালত আসামিকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী।
আপিল শুনানি শেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতে আপিল করলে হাই কোর্ট পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড বহাল রাখে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ইউসুফ গাজী ২০১৯ সালে লিভ টু আপিল করেছে, যা এখন শুনানির অপেক্ষায়।
জেলা পরিষদ আইনের ২০০০ এর ৬(২) ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে কোনও ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।