সুযোগ বুঝে বাসা বাড়িতে রাখা হলুদের সাথে কৌশলে চেতনা নাশক মিশিয়ে লোকজনদের অচেতন করে চুরির অভিযোগে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ীসহ ৫জনকে আটক করেছে যশোর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৭ ভরি সোনার অলংকার, ৭ ভরি রূপার অলংকার ও নগদ সাড়ে ৩৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলো, অভয়নগর উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে কেশবপুরের সাবদিয়া গ্রামের তাসলিমার বাড়ির ভাড়াটিয়া মাসুদ মোল্লার ছেলে তরিকুল ইসলাম (২২), সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার খোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুস সালাম বিষু (৩০), লালমনিরহাট সদর উপজেলার দালালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে যশোর শহরের মুড়লী জোড়া মন্দির এলাকার রজব আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ বক্সের ছেলে আল শরিফ গোপাল (৩৯), ঝিকরগাছা উপজেলার রাজা ডুমুরিয়া গ্রামের শাহজাহান কবিরের ছেলে জাহিদ হাসান জনি (২২) এবং মণিরামপুর উপজেলা শহরের সুন্দরী জুয়েলার্সের মালিক তাহেরপুর গ্রামের সাধন চক্রবর্তীর ছেলে সুমন কুমার চক্রবর্তী (৩৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরাসহ সংঘবদ্ধ একটি চোর সিন্ডিকেটের সদস্য সুযোগ বুঝে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে যায়। চেতনানাশক জাতীয়দ্রব্য নিয়ে ওই বাড়ির রান্না ঘরে প্রবেশ করে। রান্না ঘরে থাকা হলুদের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে রেখে চলে যায়। আর ওই হলুদ দিয়ে রান্না তরকারি খেয়ে পরিবারের সব লোক অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর চোরচক্রের সদস্যরা ওই বাড়িতে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন ধরণের মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দেয়। এভাবে কেশবপুর, মণিরামপুর, ঝিকরগাছা, শার্শা ও সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় চক্রটি চুরি করে আসছিল।
এমনই ঘটনা ঘটে কেশবপুরের দোরমুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও খতিয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা পবিত্র কুমার গোলদারের বাড়িতে। গত ১ জুন রাতে চক্রটি ঘরের গ্রিল কেটে প্রবেশ করে। সেখান থেকে ৯ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নেয়। ৫ জুন এই ঘটনায় কেশবপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী পবিত্র কুমার গোলদার।
এই রকম একাধিক ঘটনার খবর পেয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে জেলা ডিবি পুলিশ। তারই সূত্র ধরে গত ১২ অক্টোবর ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ১৮ ও ১৯ অক্টোবর কেশবপুর, মণিরামপুর, শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে। এরপর তাদের হেফাজত থেকে চেতনানাশক ওষুধ ও হলুদের গুড়া জব্দ করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মণিরামপুরের স্বর্ণপট্টিতে অভিযান চালিয়ে সুন্দরী জুয়েলার্সের মালিক সুমন কুমার চক্রবর্তীকে আটক ও তার দোকান থেকে ৭ ভরি ৩ আনা সোনার ও ৭ ভরি রূপার অলংকার এবং ৩৩ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়।