অন্যের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না’, উল্লেখ করে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা কথায় কথায় বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের সমাবেশে বাধা দেয়। আওয়ামী লীগ অন্যের কর্মসূচিতে বাধা দেয় না। আর আওয়ামী লীগ বাধা দিলে কেউ সমাবেশ করার সুযোগ থাকে না। ’
বিএনপির শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে আমরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারিনি।বিএনপির সন্ত্রাসী হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় আমাদের সিনিয়র নেতারা আহত হয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, সমাবেশে বাধা দেওয়ার রাজনীতি করে না। ’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মাদারটেক আব্দুল আজিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে সবুজবাগ থানা ও ৪, ৫, ৭৩, ৭৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বিএনপির সামবেশ দেখে আওয়ামী লীগ ভয় পায়’,- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগে এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভয় পাওয়ার দল নয়।পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ২৩ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে, পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আওয়ামী লীগ নয় বরং দেশের জনগণ বিএনপির সমাবেশকে ভয় পায়। কারণ, জনগণ সমাবেশের নাম করে বিএনপির কর্মকাণ্ড দেখেছে। বিএনপি সমাবেশের নাম করে সাড়ে তিনশ’ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
‘দেশ যখন উন্নয়নের ধারায় ঠিক তখনই বিএনপি-জামায়াত আবার নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে,’ উল্লেখ করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে আজ স্থিতিশীল রাষ্ট্র এবং উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে পরিচিত। দেশে সহিংসতা নেই, মানুষ নিরাপদে কর্মস্থলে যেতে পারছে, নিশ্চিন্তে ঘরে বাস করছে। ঠিক সেসময় আজকে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এক প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে চক্রান্ত করছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির লক্ষ্য হলো সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আমরা বলেছি, এসব দিবাস্বপ্ন বাদ দিয়ে নির্বাচনে আসুন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ ভোট দিলে আপনারাই ক্ষমতায় আসবেন। আর জনগণ ভোট না দিলে ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই। ’
সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আশ্রাফুজ্জামান ফরিদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। এ ছাড়া সম্মেলন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মুহম্মদ আনিসুর রহমান।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী জড়িতে ছিল এমন অভিযোগ করে হানিফ বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার করার পরও তাদের মাঝে অনুশোচনা বোধ কাজ করেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যার ওপর পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম গ্রেনেড হামলার জন্য ক্ষমাও চায়নি। কয়েকদিন আগে জনসভায় বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় অভিযুক্ত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবর এবং সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবি প্রমাণ করেছে এ ঘটনায় বিএনপির সবস্তরের নেতাকর্মী জড়িত। বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে এর পরিকল্পনা হয়েছিল। ’
বিএনপি সন্ত্রাসী, খুনির দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিএনপি যদি কখনো দেশকে অশান্ত করতে চায়, জ্বালাও-পোড়াও করে তাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগুন সন্ত্রাস প্রতিহতে এগিয়ে যাবে। ’
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের শেখ হাসিনা ওয়াদা করেছিলেন ২০২১ সালের আগে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত করবেন। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা যা বলেছেন তাই বাস্তবায়ন করেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নতসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চান তিনি। আর এজন্য আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ’