যশোরের বাঘারপাড়ার একটি ডাকাতি মামলায় পুলিশের চাকরিচ্যূত এএসআই জসিমসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি পুলিশ। মামলার তত্যন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম।
অভিযুক্তরা আসামিরা হলো, নড়াইল সদরের নয়নপুর গ্রামের মৃত মুক্তার হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা সদরের মাছখোলা গ্রামের জমাত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, যশোরের শার্শার সেতাই গ্রামের নাজির উদ্দিন শেখের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলামের ছেলে কামরুজ্জামান, রবিউল ইসলামের ছেলে রুহুল কুদ্দুস ওরফে আব্দুল কুদ্দুস, আমির আলী গোলদারের ছেলে ফজলু গোলদার ওরফে ফজলুর রহমান, মণিরামপুরের পারখাজুরা গ্রামের মৃত নিতাই চন্দ্র দত্তের ছেলে শ্রীরাম প্রসাদ দত্ত ওরফে রাম বাবু, মাগুরার শালিখার গোপাল গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে সোহেল রানা, সাতক্ষীরা সদরের মাছখোলা শিবতলা এলাকার মৃত ফজর আলী গাজীর ছেলে ওবাইদুল্লাহ, শ্যামনগরের বরুলিয়া গ্রামের অনাথ কুমার বৈদ্যর ছেলে নওমুসলিম ইব্রাহিম, তালার সুজনসাহা এলাকার বিশ্বরঞ্জন ঘোষের ছেলে সন্তু ঘোষ ওরফে পিন্টু, যশোরের শার্শার সেতাই গ্রামের আব্দুল গনি বিশ্বাসের ছেলে হুমায়ুন কবির ওরফে কবির হোসেন, চৌগাছার জামালতা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে চাকরিচ্যূৎ পুলিশের এএসআই জসিম উদ্দিন, সদরের শমসপুর গ্রামের দাউদ হোসেনের ছেলে সালাউদ্দিন মনা ও সাতক্ষীরা সদরের কাটিয়া দক্ষিণপাড়ার মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে বাবু।
মামলার বিবরণে ও ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১২ আগস্ট ভোরে সাতক্ষীরা সদরের হাড়দাহ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন সঙ্গী আশরাফুজ্জামানকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে খুলনার ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া নামক স্থানে পৌঁছালে ডাকাতদের কবলে পড়েন। ১টি প্রাইভেটকার ও ১টি মাইক্রোবাসে করে আসা ডাকাতরা গতিরোধ করে তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে হাত-পা বেঁধে নিয়ে যায়। পরে ডাকাতরা তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা লুট করে যশোরের বাঘারপাড়ার সুকদেবনগর এলাকায় এসে গাড়ি থেকে ইকবাল হোসেন ও আশরাফুজ্জানকে ফেলে দেয়। পুলিশ ডাকাতির বিষয়টি অবহিত হয়ে তাৎক্ষণিক স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় একটি মাইক্রোবাসসহ ৪ ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে একজন চাকরিচ্যূত পুলিশ সদস্য মিজানুর রহমান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় ডাকাতির অভিযোগে মামলা করেন।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ডাকাতরা ডিবি পুলিশ ও র্যাব পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে বেড়ায়। মূলত ডাকাতরা পাচারকারীদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার লুট করে নিয়ে থাকে। ইকবাল হোসেনদের গাড়িতে স্বর্ণ রয়েছে এমন তথ্য পেয়ে ডাকাতরা তাদের ওপর চড়াও হয়েছিল। ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী যশোরের চৌগাছার জামালতা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে চাকরিচ্যূত পুলিশের এএসআই জসিম উদ্দিন। পরে তার চৌগাছা বাজারের বাড়িতে অভিযান চালালেও তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনায় বিভিন্ন সময় ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৭ জনকে আটক করা হয়।
এ মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই ১৫ জনকে অভিযুক্ত আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।