ঢাকাWednesday , 16 November 2022
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কলাম
  5. কৃষি
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. প্রবাস
  11. বিনোদন
  12. ভ্রমণ
  13. রাজনীতি
  14. লাইফস্টাইল
  15. লিড
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যশোরে বিলকপালিয়ায় জোয়ারাধার প্রকল্প বাস্তবায়নসহ ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবি

Link Copied!

মাঘী পূর্ণিমার আগে বিলকপালিয়ায় জোয়ারধার (টিআরএম) প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সামাধানের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ভবদহ পানি নিষ্কাসন সংগ্রাম কমিটি। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়। এর আগে কালেক্টরেট চত্বরে এসব দাবিতে মানবন্ধন করা হয়।

স্মারকলিপিতে দাবি জানানো হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তাবিত ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ শীর্ষক অবিবেচনাপ্রসূত সেচ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। মাঘি পূর্ণিমার আগে বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু ও ডেল্টা প্লান-২১০০’র সুপারিশ বাস্তবায়ন, আমডাঙ্গা খাল দ্রুত সংস্কার, জনগণের জান-মাল-বসতবাড়ির ক্ষতিপূরণ ও দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভবদহ জনপদের ২০০ গ্রামের প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে একটি কুচক্রী সিন্ডিকেটের লুটপাটের লালসার শিকার হয়ে স্থায়ীভাবে পানির নিচে তলিয়ে যেতে বসেছে। উদ্ভব হয়েছে মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতি। লুটপাটকারীদের কাছে ভবদহ হলো ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯৯৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরকার আয়োজিত এক কনভেনশনে নীতিগতভাবে পর্যায়ক্রমের বিলগুলোতে টি.আর.এম প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০২ সালে বিল কেদারিয়ায় এবং পরবর্তী বিল হিসেবে ২০০৬ সালে বিল খুকশিয়ায় টি.আর.এম’র সফলতায় ¯্রােতের ভরবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্রুত নদীগর্ভের পলি কেটে কাট পয়েন্ট থেকে নদী ২৫-৩০ ফুট গভীর ও মোহনা সচল হয়েছিল। পরবর্তী নির্ধারিত বিল কপালিয়ায় টি.আর.এম কার্যকর করতে গেলে প্রকাশ্য দিবালোকে সশস্ত্র আক্রমণে ২০১২ সালে হুইপ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আহত হন এবং সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে টি.আর.এম প্রকল্প বাতিল করে দেয়। ফলে ওই চক্র ও সিন্ডিকেট স্থায়ী লুটপাটের মদদ পেয়ে যায়। পুনরায় নিরঙ্কুশ জনমতের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি জাতীয় কর্মশালা হয়। ওই কর্মশালায় ও.ড.গ কর্তৃক ব্যাপক জরিপ ও জনমত যাচাই করে প্রস্তাবিত বিল কপালিয়া ও পর্যায়ক্রমে বিলে বিলে টি.আর.এম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যা ডেল্টা প্লান ২১০০ এর সুপারিশের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। ২০১৭ সালের ১০ই ডিসেম্বর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পানিসম্পদ মন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে পুনরায় পর্যালোচনার পর পানিসম্পদ মন্ত্রী টি.আর.এম প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের রোষানলে পড়ে। ২০১৮ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ওই প্রকল্প বাতিল করে নতুন প্রকল্প প্রণয়নের নির্দেশ দেয়। এরপর হঠাৎ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ভবদহ গেটে এসে টি.আর.এম হবে না এবং ই বিলগুলোকে জলাভূমি হিসাবে ঘোষণা দেন। তিনি ডেল্টা প্লান-২১০০’র অজুহাত উত্থাপন করেন। প্রকৃত সত্য হলো, ভবদহ এলাকা কখনই জলাভূমি বা জলাশয় ছিল না। এমন তথ্য রাষ্ট্রীয় নথিপত্রেও দেখা যায় না। বরং ডেল্টা প্লান-২১০০ এ ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ রয়েছে।

স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সরকারকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে ও জনমতকে উপেক্ষা করে পাম্পের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জলাবদ্ধতা মুক্ত করার অবিবেচনাপ্রসূত প্রকল্প দিয়ে অর্থ অপচয় করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলেছে, এবার পাম্পের মাধ্যমে সেচ দেয়ার ফলে এলাকায় ব্যাপক ফসল উৎপাদন এবং এবার এলাকা জলাবদ্ধ হয়নি, মানুষের বাড়িঘর-রাস্তা এবং কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠেনি। আবারো পানি উন্নয়ন বোর্ড জনমত উপেক্ষা করে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং ৪৫ কোটি টাকার সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। যার ফলে ওই অর্থ সম্পূর্ণ অপচয় হবে এবং বরাবরের মতো জনদুর্ভোগ মারাত্মক আকার ধারণ করবে। জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের বরাদ্দ একনেকে পাস হলেও বাস্তবায়ন বিলম্ব করে গণদুর্ভোগ জিইয়ে রাখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনৈতিক জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে ২১ ভেন্ট থেকে বারোয়াড়ি মোহনা পর্যন্ত ৫০-৬০ কিলোমিটার নদী হত্যা করা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে ক্রাস প্রোগ্রামে মাঘি পূর্ণিমার আগে বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু ও ডেল্টা প্লান-২১০০ এর সুপারিশ বাস্তবায়ন, ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার সেচ প্রকল্প ও প্রস্তাবিত প্রায় ৪৫ কোটি টাকার ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ অবিবেচনাপ্রসূত সেচ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি আহ্বায়ক রনজিত বাওয়ালীর সভাপতিত্বে কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধন শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব অধ্যক্ষ চৈতন্য কুমার পাল, শিবপদ বিশ্বাস, অনিল বিশ্বাস, রাশিদা বেগম, রাজু আহম্মেদ, নাজিম উদ্দিন, জিল্লুর রহমান ভিটু, তসলিম-উর-রহমান, হাসিনুর রহমান প্রমুখ।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।