:যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের কিংস মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড হসপিটাল ও দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় আলাদা মামলা হয়েছে। চিকিৎসা বর্জ্য ও পয়:বর্জ্য সরাসরি এবং পাইপের মাধ্যমে ভৈরব নদে ফেলে ভরাটকে ত্বরান্বিত করাসহ নদকে দূষণ করার অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদফতর যশোরের পরিদর্শক সৌমেন মৈত্র বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।
আসামিরা হলো, কিংস মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড হসপিটালের মালিক ডাক্তার সাবিনা বানু ও ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান এবং দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক রাজু আহম্মেদ।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ জুন অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভৈরব নদে যে সকল প্রতিষ্ঠানের সোয়ারেজ পাইপ রয়েছে তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নসহ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও মনিটরিং করার জন্য একটি উপ কমিটি করা হয়। এই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড ১২ জুলাই একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সরেজমিনে পরিদর্শনসহ গত ৭ আগস্ট কিংস মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড হসপিটালকে চিঠি দেয়া হয়। গত ১৬ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চিঠি গ্রহণ করা হলেও এর কোনো জবাব দেয়নি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। গত ২৭ সেপ্টেম্বর চিঠি পাঠিয়ে পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম না চালানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু এই চিঠিরও কোনো জবাব দেয়নি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। গত ২৫ অক্টোবর পরিবেশ অধিদফতরের সাঁটলিপিকার জিহাদ হোসেন ও হিসাবরক্ষক মিজানুর রহমান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী কামরুজ্জামান কিংস মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড হসপিটাল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই ৩০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন চিকিৎসা বর্জ্য সরাসরি ভৈরব নদে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে একই সাথে নদের ভরাট কার্যক্রম ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং দূষিত চিকিৎসা বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য ফেলার কারণে ভৈরব নদের পরিবেশ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে।
একইভাবে গত ৭ আগস্ট দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে চিঠি দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠান থেকে চিঠি গ্রহণ করা হলেও এর কোনো জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এরপর তাদেরকে পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন কার্যক্রম পরিচালনা না করার জন্য চিঠি দেয়া হলে এরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। পরে দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে বিভিন্ন চিকিৎসা বর্জ্য সরাসরি এবং পয়ঃবর্জ্য সরাসরি পাইপের মাধ্যমে ভৈরব নদে ফেলার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া ক্লিনিক পরিচালনা ও ভৈরব নদে চিকিৎসা বর্জ্য, পয়ঃবর্জ্য সরাসরি এবং পাইপের মাধ্যমে ফেলে ভরাটকে ত্বরান্বিত করাসহ নদকে দূষণ করায় তিনি এ মামলা করেছেন।