আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ (ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেন্টস ডে) উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিয়ো গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অভিবাসীদের অধিকার হচ্ছে মানবাধিকার। এটি ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, যারা ভিটে-মাটি ত্যাগ করে দেশ ছাড়ে তাদের অসহায়ত্বের কথা গুরুত্ব দিতে হবে। সকলেই বিলাসী জীবনের জন্য মাতৃভূমির মায়া ত্যাগ করেন না।নিরাপদ আশ্রয়, উন্নত ভবিষ্যত এবং মর্যাদাশীল জীবন-যাপনের অভিপ্রায়েই অধিকাংশ মানুষ প্রিয়-পরিচিতজনের সান্নিধ্য ত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন।
মহাসচিব উল্লেখ করেন, মানুষের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে মানব পাচারকারিরা। মোটা অংকের টাকা নেওয়ার পরও গভীর জঙ্গলে কিংবা ভয়ংকর পানির স্রোতে ঠেলে দেয় দালাল চক্র। এর ফলে গত ৮ বছরে কমপক্ষে ৫১ হাজার অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।এর বাইরে রয়েছে আরো অনেক মানুষ, যারা নিখোঁজ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের কাছে। আর এসব ভিকটিমের সকলেই কারোর বাবা, মা, বোন, সন্তান, ভাই, ভাতিজা অথবা খালা। অর্থাৎ তারা আমাদেরই একজন ছিলেন। এজন্যে তাদের অধিকারকে অবজ্ঞা করার অবকাশ নেই।
মহাসচিব আরো উল্লেখ করেছেন, প্রতি বছর কমপক্ষে ২৮ কোটি মানুষ দেশান্তরী হচ্ছে। মহাসচিব বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন সাধ্যমত চেষ্টা করি এমন করুণ মৃত্যু ঠেকাতে। আর এটা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
অভিবাসী দিবসের আলোকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)র প্রধান গিলবার্ট এফ হোঙবো বলেন, বিভিন্ন দেশে ১৬ কোটি ৯০ লাখ অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষাতেও আন্তরিক পদক্ষেপ নিতে হবে। মৌলিক মানবাধিকার ও শ্রমিক অধিকার পেলে অভিবাসীরা অনেকটা স্বস্তিতে দিনাতিপাতে সক্ষম হবেন। স্মরণ করা যেতে পারে, অভিবাসী শ্রমিকের অনেকেরই কাজের অনুমতি না থাকায় গাঁধার খাটুিন খাটছেন, অথচ ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। একশ্রেণীর ব্যবসায়ী কাগজপত্রহীন শ্রমিকদের সাথে লাগাতার প্রতারণা করছেন।