জেলার শেরপুর উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসুচীর ৮ টন চাল গোপন নিলামে কারসাজির মাধ্যমে নামমাত্র ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
অথচ বর্তমান বাজারে এই চালের মুল্য নুন্যতম ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা দরে চলিতেছে বলে জানা যায়। এতে সরকার প্রচুর রাজস্ব হারিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায় বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ ঘটিকার সময় বগুড়া জেলার শেরপুর থানা চত্বরে এই গোপন নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাবা সানজিদা সুলতানা, শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মামুন এ কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
শেরপুর থানার এসআই আব্দুস সালাম জানান, ৮ হাজার ৩৪০ কেজি জব্দকৃত চাল নিলামে ১৯ জন তালিকাভুক্ত হলেও অংশ নেয় মাত্র ১৬জন। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ টাকা কেজি ডাক ওঠায় শেরপুর শহরের প্রফেসর পাড়ার আজিজুল হকের নিকট এই চাল বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা যায়।
অভিযোগ উঠেছে, শেরপুরের ধান-চাল ব্যবসায়ীদের কাউকে না জানিয়ে অপ্রচলিত দুটি পত্রিকায় নামমাত্র বিজ্ঞাপন দিয়ে গোপনে সংক্ষিপ্ত এই কারসাজি নিলাম ডাক দেখিয়ে সরকারি চাল হাতিয়ে নিয়েছে একটি কুচক্রী মহল। পরে থানা চত্বরেই থাকা অবস্থায় ১৪ টাকা কেজি চাল ৩৮ টাকা দরে এই কারসাজি নিলামের পূর্বপরিকল্পিত গাবতলীর ব্যাবসায়ী মোস্তফা নামে ব্যবসায়ী চাল ক্রয় করে ট্রাক বোঝাই দিয়ে নিয়ে যান।
শেরপুর উপজেলার চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলীমুর রেজা হিটলার জানান, নিলামের বিষয়টি আমাদেরকে কেউ জানায়নি। আমরা জানতে পারলে অংশগ্রহন করতাম। সরকার আরও বেশি করে রাজস্ব পেয়ে সরকার লাভবান হতো।
শেরপুর থানার খাদ্য নিয়ন্ত্রক মামুন এ কাইয়ুম জানান, নিলামে আমি উপস্থিত ছিলাম। সর্বোচ্চ ২০ মিনিটের মধ্যেই ১৪ টাকা ডাক ওঠায় নিলামে চাল বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তবে এ চালের বাজার মূল্য ৩৫ টাকার কম নয় বলে তিনি জানান।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার জানান, নিলাম ডাকে অংশ নেবার জন্য নোটিশ ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। এতে শেরপুর ও বগুড়া থেকে অনেকেই অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকেও আমি দেখেছি। তবে শেরপুর উপজেলার ধান চাল ব্যবসায়ীরা ছিলেন কি না এমন প্রশ্নের তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
নিলামের সর্বোচ্চ ডাককারী আজিজুল হক জানান, ওই চাল ১৪টাকা কেজি দরে নিলামে ডেকে নেই। এর সঙ্গে সাড়ে ৭% ভ্যাটসহ টাকা পরিশোধ করেছি। পরে তা আরেকজনের কাছে বিক্রির কথাও তিনি স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের মাগুড়ারতাইড় গ্রাম থেকে ২টি ভটভটিতে পাচারের সময় ৮ হাজার ৩৪০ কেজি খাদ্যবান্ধব চাল উদ্ধার করে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করে।