উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায়, দেশ গড়বো সমাজসেবায়’ এ প্রতিপাদ্যে যশোরে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০টায় কালেক্টরেট চত্বরে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে র্যালির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমূক্ত সমাজ গড়ে তুলতে তৃণমূল মানুষের কাছে সরকারের সেবা পৌঁছে দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন সমাজসেবা কার্যালয়। সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নত জীবনযাপনের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। আগামীর উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সমাজসেবার কার্যক্রম অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। যশোরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের শত শত সদস্যের অংশগ্রহণে র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। এরপর শিল্পকলা মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক অসিত কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক হুসাইন শওকত। সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আশরাফুল আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সহকারী পরিচালক ইতি সেন, মঞ্জুরুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম। এছাড়া, নিজের জীবনে সমাজসেবা কার্যালয়ের ভূমিকা তুলে ধরে স্মৃতিচারণমূলক বক্ততা করেন উপকারভোগী রুহুল আমিন। তার জীবনের সাফল্য অর্জনে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের অবদানের কথা স্মরণ করেন তিনি।
সমাজসেবায় অনন্য অবদান রাখায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পেন ফাউন্ডেশন ও অক্ষর মানবকল্যাণ সংস্থাকে সম্মাননা প্রদান প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ। সমাজের বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে সহায়তা ও বেকারদের আয়ের পথ তৈরি করে দেওয়ায় পেন ফাউন্ডেশন এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও সমাজের মূলধারায় নিতে আসতে অক্ষর মালবকল্যাণ সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় তাদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ১১জন ঋণগ্রহীতাকে সুদমুক্ত ঋণ ও ১১ জন ভাতা উপকারভোগীদের মধ্যে কার্ড বিতরণ করা হয়। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে যশোরে বর্তমানে এক লাখ ১৪ হাজার ৭৩৪ জনকে বয়স্ক ভাতা, ৫৪ হাজার ৪৭১ জনকে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, ৪৯ হাজার ৪৬২ জনকে প্রতিবন্দ্বী ভাতাসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, হিজড়া, যৌনকর্মী, শিক্ষা উপবৃত্তি, এতিম সন্তানদের শিক্ষায় আর্থিক সহায়তা, দারিদ্র্য বিমোচনমূলক কর্মসূচি, দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীতে আর্থিক সহায়তা, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনসহ ৫৪টি কল্যাণমূলক সেবা করে যাচ্ছে সরকার। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করেন দর্শকরা।