বুধবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮ টা। দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা ইউনিয়নের বলতৈড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেল। চাইল্ড হ্যাভেন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৫জন শিক্ষার্থীকে একটি ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে এলাকা ঘুরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে আয়োজন করা হয়েছে একটি বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রারও। কথা বলে জানা গেলে, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টিতে অংশগ্রহণকারী ৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫জনই বৃত্তি পেয়েছে। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থী ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। এই খুশি এবং নতুন শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার যোগাতে বিদ্যালয়টির এমন ব্যতিক্রমী সংবর্ধণার আয়োজন।
ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া সীমান্ত সরকার বলে, আমি এই স্কুল থেকে বৃত্তি পেয়েছি। সত্যি খুব ভালো লাগছে। আমাদের আজকে ঘোড়ার গাড়িতে নিয়ে র্যালী করল। আমি অনেক খুশি। আমি আরও পড়ালেখা করব। আমি বড় হয়ে ভালো মানুষ হতে চাই।
সাধারণ বৃত্তি পাওয়া রামিজ ফারিয়া বলে, আমি বৃত্তি পেয়েছি। আমার বাবা-মা অনেক খুশি। আমার স্যার-মেডামরা ভালোমত পড়িয়েছে বলে আমি বৃত্তি পেয়েছি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০০ জন। ২০১৭ সালে ১৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে ১৩ জন। পরবর্তী বছরেই এই ফলাফল উন্নয়ন হয়। ২০১৮ সালে ১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে শুধু ১ জন ছাড়া ১৭ জন পেয়েছে ‘এ+’। আর সেই বছর বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ জন এবং ২০১৯ সালের পরীক্ষায় ৩২ জনের শিক্ষার্থীর মধ্যে ‘এ+’ ২২ জন। অভিভাবকরা এই ফলাফলে খুশি হলেও বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণসহ প্রার্থনার স্থান নির্মানের প্রত্যাশা করছেন।
সীমান্ত ও রামিজ ফারিয়া ছাড়াও বৃত্তি পাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন- মেহেদী হাসান মিম, প্রিয়জিৎ রায়, সুমাইয়া তাসমীন তিশা
সাধারণ বৃত্তি পাওয়া প্রিয়জিৎ রায়ের মা সুমতি রানী রায় বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি। আমার দুইটি ছেলে এবং দুইজনেই এই বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে। আমি মনে করি এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভালো। আমি প্রত্যাশা করি দিন দিন এই বিদ্যালয় আরও উন্নতির দিকে ধাবিত হবে।
বৃত্তি পাওয়া সুমাইয়া তাসমীন তিশার মা মোছাঃ ফেরদৌসী বলেন, এই বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভালোই। শিক্ষকরাও অনেক আন্তরিক। তবে আমার কাছে মনে হয় এই বিদ্যালয়ে যদি একটা প্রার্থনার স্থান থাকে তবে অনেক ভালো হয়। কেননা অনেকেই আছে যারা নামাজ পড়ে। মন্দিরে যায়। তবে বার্ষিক যে ফলাফল। তা দিন দিন আসলেই ভালো হচ্ছে। এই স্থানটি যদি ধরে রাখে তবে আরও ভালো হবে।
বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষ কৌশিক দাস বলেন, আমাদের যাত্রা শুরু হয় আজকে থেকে ১০ বছর আগে। আমরা সর্বোত্তম দেয়ার চেষ্টা করি। আমার শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তার ফলে এই ফলাফল আমরা পেয়েছি। আমরা বিদ্যালয়টিকে গুছিয়ে নিয়েছি। অভিভাবকদের পাশে চাই। আমরা খুব শিঘ্রই বিদ্যালয়ের কাঠামোর তৈরীর পাশপাশি প্রার্থণার স্থানটিও তৈরী করার চিন্তা পরিকল্পনায় রেখেছি।