: ভূমি ও গৃহহীনের অভিশাপমুক্ত হলো যশোরের তিন উপজেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্যে এই অভিশাপমুক্ত হলো এই তিন উপজেলার মানুষ। উপজেলা তিনটি হচ্ছে, বাঘারপাড়া, কেশবপুর ও শার্শা। এ কারণে ২২ মার্চ এই তিন উপজেলার ভূমি ও গৃহহীনদের কাছে একটি মাইলফলক।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বুধবার চতুর্থ ধাপে যশোরে ৩৩৩ টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে বাঘারপাড়ায় ৪৯, কেশবপুরে ৪৫ ও শার্শায় ৩০টি ঘর রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সাত জেলা ও ১৫৯ উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। তার মধ্যে আছে যশোরের এই তিন উপজেলা। এর মধ্য দিয়ে দেশের ৩৯ হাজার ৩৬৫ পরিবারে হাসি ফুটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে গণভবন থেকে চতুর্থ ধাপে ভার্চ্যুয়ালি তিনি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। উপহারের জমি আর ঘর পেয়ে খুশির ফল্গুধারা বইছে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মধ্যে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ হাসিনা বলেন,‘আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বাড়ি, আশ্রয় এবং জীবিকার সুযোগ পাক। প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যথাযথ সম্মানের সাথে বসবাস করুক। ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোঁটানো। জাতির পিতা দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে উন্নত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। যার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, রাজশাহী, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা জেলাকে এবং যশোরের শার্শা, কেশবপুর ও বাঘারপাড়াসহ ১৫৯টি উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। গত বছর মাগুরা ও পঞ্চগড় জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে মোট নয়টি জেলা ও ২১১টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হলো। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় গণভবনসহ বিভিন্ন প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পরে প্রধানমন্ত্রী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নওয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশালের বানারীপাড়ার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর হস্তান্তর উপলক্ষে যশোর সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে বর্ণিল আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল। সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান।
উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা সদর উপজেলার ধানঘাটা সিরাজসিংহা ও দেয়াড়ার ৫৫ জন উপকারভাগীর মধ্যে দু’ শতক জমির কবুলিয়াত দলিল ও দু’কক্ষ বিশিষ্ট ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। আজ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৫, বাঘারপাড়ায় ৪৯, অভয়নগরে ১৯, মণিরামপুরে ৪৫, কেশবপুরে ৪৫, ঝিকরগাছায় ৬০, চৌগাছায় ৩০ এবং শার্শায় ৩০টি সর্বমোট ৩৩৩টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। এর আগে যশোর জেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ১৮১, তৃতীয় পর্যায়ে (প্রথম ধাপ) ৩১৮ এবং তৃতীয় পর্যায়ে (প্রথম ধাপ) ২৬২ সর্বমোট ১ হাজার ৭৬১ টি ঘর আট উপজেলায় হস্তান্তর করা হয়।