দেশের তৈরি ঢাকাই মসলিনের গৌরব একসময় সারা বিশ্বে ছিল। বিভিন্ন কারণে প্রায় ১৭০ বছর আগে এই গৌরবময় ঢাকাই মসলিন হারিয়ে যায়। তবে ২০১৮ সালে মসলিন পুনরুদ্ধারে সরকারের নেওয়া নতুন উদ্যোগের ফলে আবারও ঢাকাই মসলিন বিশ্ব মাতাবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
তাঁত বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্য ও বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড ঢাকাই মসলিন পুনরুদ্ধার করে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়। বিনিয়োগকারীদের এসব সফলতা ও সম্ভাবনার কথা জানাতে আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজন করা হচ্ছে বিশেষ সেমিনারের।
তাঁরা জানান, কারিগরি, বাণিজ্যিক ও নীতি সহায়তা দিতে সরকার প্রস্তুত। এ ছাড়া মসলিনের প্রধান কাঁচামাল বিশেষ তুলা উৎপাদন করে কিভাবে কৃষকরা প্রচলিত কৃষি থেকে অধিকতর লাভবান হবে এবং সম্ভাব্য রপ্তানি পণ্য হিসেবে বিশ্ববাজারে এর সম্ভাবনাও তুলে ধরা হবে এই সেমিনারে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের সোনালি ঐতিহ্য মসলিনের সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধারে প্রকল্প নেওয়া হয়। এরই মধ্যে ব্যাপক অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে মসলিনের কাঁচামাল ফুটি কার্পাস খুঁজে বের করা, ফুটি কার্পাসের চাষাবাদ, সুতা উৎপাদন এবং কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়ন করে উন্নতমানের মসলিন উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে।বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড মসলিন সুতা তৈরির তুলার জাত উদ্ঘাটন এবং তুলা দিয়ে ৩০০ থেকে ৭৫০ কাউন্টের সুতা তৈরিসহ মসলিন শাড়ি তৈরির প্রযুক্তি উন্মোচন করেছে। দেশের সাধারণ তাঁতিদের মধ্যে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভায় ‘ঢাকাই মসলিন হাউস’ স্থাপন করা হয়েছে।মসলিনের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ ও পেটেন্ট অর্জিত হওয়ায় দেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের টেকসই উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে এই প্রকল্প ‘জনপ্রশাসন পদক-২০২১’ লাভ করেছে। এই প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী কালের কণ্ঠকে বলেন, মসলিন শাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া বেশ জটিল ও শ্রমসাধ্য কাজ। একটি মসলিন শাড়ি তৈরি করতে প্রথমে সুতা উৎপাদন করতে হয় এবং পরে বুনন কাজ চলে। একটি মাঝারি মানের মসলিন শাড়ি তৈরি করতে সাত-আট মাস লেগে যায়। ফলে শাড়ির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়।তিনি বলেন, এ জন্য বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে মসলিনের স্বকীয়তা ঠিক রেখে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে অংশীজনদের সঙ্গে প্রযুক্তি ও গবেষণালব্ধ জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করা হবে। আর এটা সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হলে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
বিমান চলাচল চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু
বাংলাদেশ থেকে আরো ফ্লাইট চাই, ইউএইর চার বিমান সংস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক

সোমবার (১৫ মে) বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ফ্লাইট চলাচলের বিষয়ে দুই দিনের আলোচনায় এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্রথম দিনের আলোচনায় ইউএইর পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক সাইফ মোহম্মেদ আল সুওয়াইদি। বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
সূত্র আরো জানায়, এমিরেটস এয়ারলাইনস বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় যেকোনো দেশে বাধাহীনভাবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের অনুমতি চায়। এছাড়া ঢাকা থেকে সপ্তাহে আরো ৭টি এবং সিলেট থেকে তিনটি যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চায়। ফ্লাই দুবাই ফিফথ ফ্রিডমের অনুমতি নিয়ে ঢাকা-ব্যাংকক, ঢাকা-কুনমিং, চট্টগ্রাম-ব্যাংকক এবং চট্টগ্রাম-কুনমিং পথে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায়।
এদিকে এয়ার অ্যারাবিয়া ঢাকা-করাচি রুটে যাত্রীবাহী ও ভারতে কার্গো ফ্লাইট চালাতে অনুমতি চায়। তারাও প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে আরো ১৪টি, চট্টগ্রাম থেকে ৭টি এবং সিলেট থেকে ৭টি যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি চায়।
ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ প্রতি মাসেই বাড়ছে
১০ মাসে ঋণ নিয়েছে ৮২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়েছে ৮২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বাইরে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকার আট হাজার ৮৪১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ৯০ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত সময়ে ব্যাংক খাতে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। আর এপ্রিলে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৫৬ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ৭৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দিয়েছে সাত হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।
এপ্রিল মাস শেষে ব্যাংক খাত থেকে সরকার মোট ঋণের মধ্যে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। এ ছাড়া দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে নিয়েছে দুই লাখ ২১ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।
এদিকে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকেও ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।