কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশ থেকে নানা উপায়ে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। বর্তমানে যে ডলার–সংকট চলছে, এর পেছনেও অর্থ পাচার দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসব অর্থ পাচারকারীর বিরুদ্ধে সামাজিক অবস্থান তৈরির আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আসুন সবাই মিলে তাদের ঘৃণা করি, তিরস্কার করি।’
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘সিআইপি (শিল্প)-২০২১’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যে ডলার–সংকট চলছে, তা কেন হলো। এ জন্য জাতি হিসেবে আমাদের অনেকেই কমবেশি দায়ী। আমাদের অনেকেই কিছু না কিছু অর্থ বিদেশে নিয়েছি। ওই অর্থ দিয়ে কানাডা, দুবাই কিংবা মালয়েশিয়ায় বাড়ি কিনেছি। এভাবে টাকা পাচার হচ্ছে।’
সময় কোরিয়ার উদাহরণ দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ১৯৬০–৭০ সালের দিকে এ দেশে কোরিয়ান ছেলেরা পড়তে আসত। এখন বাংলাদেশের ছেলেরা সেখানে যায়। বাংলাদেশকে তারা (দক্ষিণ কোরিয়া) সহায়তা (এইড দেয়) করে। এটা কী করে সম্ভব হয়েছে? তারা (দক্ষিণ কোরিয়া) কোনো মুদ্রা (কারেন্সি) বিদেশে নিতে দেয়নি। সব অর্থ তারা দেশের মধ্যে খরচ করেছে। সব বিদেশি মুদ্রা তারা খরচ করেছে শিল্প করার জন্য। অন্যদিকে বিদেশে টাকা পাচারের জন্য সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তির (ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট) বিধান ছিল।
নানা উপায়ে দেশ থেকে টাকা পাচার হচ্ছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, এখন যদি বলেন, কানাডায় তিন কোটি টাকা পাঠাবেন। দুই দিনও লাগবে না। কারা করে? এই যে প্রতিদিন বিমানবন্দরে সোনা ধরা পড়ে। এই যে টাকা ও ডলারের লেনদেন—এসব নিয়ে জাতিকে সচেতন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইকে ব্যবসায়ী মহলে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
সিআইপি সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।
দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ৪৪ জন ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (শিল্প) বা সিআইপি নির্বাচন করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। আজ তাঁদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়।
গত ৩ এপ্রিল এক গেজেটের মাধ্যমে ২০২১ সালের জন্য সিআইপি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত গেজেট অনুসারে, এনসিআইডি ক্যাটাগরিতে ৬ জন, বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন) ক্যাটাগরিতে ২০ জন এবং বৃহৎ শিল্প (সেবা) ক্যাটাগরিতে ৫ জন, মাঝারি শিল্প (উৎপাদন) ক্যাটাগরিতে ১০ জন, ক্ষুদ্রশিল্প (উৎপাদন) ক্যাটাগরিতে ২ জন ও মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ১ জন বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।